পড়াশুনার পাশাপাশি ছবি আঁকা এবং গল্পের বই পড়ার শখ রজবীর। পরিবারের বেশিরভাগ সদস্যই চাকুরিজিবী হওয়ার সুবাদে পরিবারের লোকজন চাচ্ছিল পড়াশুনা শেষ করে চাকরি করুক বা শিক্ষকতা, তাই ছবি একে গল্পের বই পড়ে পড়াশুনার কোনরকম ক্ষতিহোক সেটা চায়নি পরিবার।
বলছি রজবী তাসনীমের কথা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগ থেকে বিবিএ এবং এমবিএ শেষ করে পুরোদমে সংসারি হয়ে উঠা রজবী এখন উদ্যোক্তা।
স্বামীর চাকুরির সুবাদে দেশের বিভিন্ন জেলায় থাকা হয় রজবীর। যখন সিলেট ছিলেন প্রায়ই মনিপুরি পাড়ায় যেতেন তাদের তৈরি শাড়ি এবং অন্যান্য পোষাক তার খুবই ভালো লাগতো। তাদের শাড়ি তৈরি তাকে মুগ্ধ করে।
পরে চলে আসেন বগুড়ায় এখানে এসেও তার শাড়ির প্রতি ভালোবাসা কমেনি। নিজের জন্য প্রচুর শাড়ি কিনতেন, একদিনতো একসাথে অনেকগুলো শাড়ি কিনে ফেলেন রজবী। পরে সেই শাড়িগুলো ডিজাইন করেন নিজের মতো করে এবং বাসার কাজের মেয়েকে দিয়ে সেগুলো সেলাই করান (টাকা দিয়ে)। এ থেকেই শুরু তার উদ্যোগ Kadambari Exclusive by Razbi -কাদম্বরী।
প্রথমে নিজে শাড়িতে ডিজাইন করে সেগুলো বগুড়ায় বিভিন্ন নারীদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিতেন, পরে নারীরা সেগুলোতে ডিজাইন এবং নির্দেশনা অনুযায়ী হাতের কাজ করে দিতেন (হাতের সেলাই) । এভাবে শাড়ি তৈরি করে তা তার ফেসবুক পেজে পোস্ট দেন এবং সেগুলো অনলাইনে বিক্রি করেন। দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিরা তার কাছ থেকে শাড়ি কিনে থাকে বলে জানান রজবী।
২০২২ সালে “আনিসুল হক কোহর্ট ফর গ্রোথ অফ উইমেন অন্টাপ্রেনিউরস” সম্পর্কে জানতে পারেন এবং সেখানে আবেদন করে নির্বাচিত হন। কোহর্টের পুরোটা সময় বিভিন্ন সেশনে অংশ নেন এই উদ্যোক্তা।
২০২২ সালে স্বামীর সহযোগিতায়, তিনি তার উদ্যোগের জন্য নিজস্ব কারখানা চালু করেন ৩ জন কর্মী নিয়ে। আনিসুল হক কোহর্টে অংশ নিয়ে মুনির হাসান স্যারের পরামর্শ নেওয়ার সুযোগ হয়। স্যারের পরামর্শে তিনি কর্মী সংখ্যা বৃদ্ধি করেন এবং কাজগুলোকে বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টে ভাগ করেন। বর্তমানে ১০ জন স্থায়ী কর্মী ছাড়াও প্রায় ১৩০ জন নারী বাড়িতে বসে তার শাড়ির হাতের সেলাইয়ের কাজ করেন।
আনিসুল হক কোহর্ট থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক প্রশিক্ষণ তার ব্যাবাসকে এগিয়ে নিতে সাহায্য করছে। বর্তমানে শাড়ি তৈরির পাশাপাশি মেয়েদের বিভিন্ন পোষাক যেমন: টপস, ব্লেজার, প্যান্ট ইত্যাদি তৈরি করছেন।
উল্লেখ্য, সাত মাসব্যাপী “আনিসুল হক কোহর্ট ফর গ্রোথ অফ উইমেন অন্টাপ্রেনিউরস”আয়োজিত হয় ঢাকার প্রয়াত মেয়র আনিসুল হকের স্মরণে গঠিত আনিসুল হক ফাউন্ডেশন, বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক (বিডিওএসএন) ও উদ্যোক্তাদের প্লাটফর্ম চাকরি খুঁজব না চাকরি দেব গ্রুপ এর যৌথ উদ্যোগে। পার্টনার হিসেবে ছিল ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইনোভেশন অ্যান্ড অন্ট্রাপ্রেনিওরশিপ বিভাগ, আনিসুল হক স্টাডি সেন্টার ও ভেঞ্চার ক্যাপিটাল বাংলাদেশ।