পেপার কোন ও টিউব একটি মোড়কজাত করণ পণ্য। এটি স্পিনিং মিল, টেক্সটাইল মিল, জুট মিল, পেপার মিল ও পলিপ্যাক ইন্ডাস্ট্রিতে ব্যাপকভবে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত রাস্তাঘাটের ময়লা কাগজ কুড়িয়ে সেগুলা পুনঃব্যবহার বা রিসাইকেল করে পেপার কোন তৈরী করা হয়।
আগে পেপার কোনের প্রায় ৯০ শতাংশই আমদানী করা হত। মূলত ভারত,পাকিস্তান ও ইন্দোনেশিয়া প্রভৃতি দেশ থেকেি কোনগুলো আসত। কিন্তু ২০১০ সালের পর থেকে এ অবস্থার উন্নতি হয়। বর্তমানে দেশীয় কাঁচামাল ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে পেপার কোনের প্রায় শতভাগই দেশে উৎপাদিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ পেপার কোন এন্ড টিউব ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশনের (বিপিসিটিএমএ) তথ্য অনুসারে, দেশে বর্তমানে ৫০০টি পেপার কোন এন্ড টিউবের কারখানা রয়েছে। এর মধ্যে এসোসিয়েশনের নিবন্ধিত কারখানা হচ্ছে ১৮০টি। এসব কারখানেয় প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে ৩ লাখের অধিক লোক কাজ করছে, যার ৮০ শতাংশই নারী। বাংলাদেশ সরকার এ খাত থেকে প্রতিবছর প্রায় ২৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করে থাকে।
১৯৫৫ সালের দিকে প্রথম এদেশে ঝুলন্ত পদ্ধতি ব্যবহার করে সুতা পেঁচানো হত। পরবর্তীতে ঝুলন্ত পদ্ধতির পাশাপাশি কনিকেল কোনের আবির্ভাব ঘটে। এর ফলে উৎপাদন বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি মেশিনের গুণগত মানও বেড়ে যায়। বর্তমানে মিলগুলোর আধুনিকায়নের ফলে পেপার কোন ও টিউবের ব্যবহার হচ্ছে ব্যাপকভাবে।
১৯৮৮ সালে প্রথম বেসরকারি পর্যায়ে দেশে পেপার কোন ও টিউব কারখানা গড়ে উঠে। এদের মধ্যে সায়াম, মুক্তাদির ও মুন্নু টেক্সটাইল উল্লেখযোগ্য। বর্তমানে ঢাকা, চট্টগ্রাম, নরসিংদী, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, ফরিদপুর, যশোর, খুলনা ও নারায়ণগঞ্জসহ সারাদেশে এই কারখানাগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে গড়ে উঠেছে।
২০১০ সালে সরকার বিদেশি পেপার কোন ও টিউব আমদানিতে ১৫% শুল্ক আরোপ করা হয়। তারপর থেকে দেশের কারখানাগুলোতে ব্যাপক প্রসার ঘটে। ধীরে ধীরে বিদেশ থেকে এই পণ্য আমদানি প্রায় শতভাগ বন্ধ হয়ে যায়। ১০ বছরের ব্যবধানে কারখানার সংখ্যা একশ থেকে প্রায় পাঁচ শতাধিক ছাড়িয়ে যায়।
বাংলাদেশ পেপার কোন এন্ড টিউব ম্যানুফ্যাকচারার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি সরকার মো. সালাউদ্দিন জানান, কারখানাগুলো ১০০% পরিবেশ বান্ধব হওয়ায় রপ্তানীজাত পন্য হিসেবে পেপার কোন বেশ জনপ্রিয়। বর্তমানে বছরে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার বেচা-কেনা হয়। দেশের শ্রমশক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে রপ্তানিতে বড় বাজার ধরা সম্ভব। তিনি জানান, আগামী দশ বছরে এ খাতে ১০ বিলিয়ন ডলারের পন্য রপ্তানি করা যাবে।
ছবি ও তথ্যসূত্র – দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড