সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও ফ্রেডরিখ-ইবার্ট-স্টিফটুংয়ের (এফইএস) উদ্যোগে গতকাল আয়োজিত হয় একটি ওয়েবিনার। ‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ইকোনমি’ শীর্ষক এ আলোচনায় সিপিডির নানা গবেষণার তথ্য উঠে আসে।
এ ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মুস্তাফিজুর রহমান। ওয়েবিনারে মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন সিপিডির জ্যেষ্ঠ গবেষণা সহযোগী সৈয়দ ইউসুফ সাদাত।
ইউসুফ সাদাত মূল প্রতিবেদনে বলেন, বিশ্বের অনলাইনভিত্তিক শ্রমবাজারের ১৬ শতাংশ এখন বাংলাদেশের দখলে। তাই বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অনলাইনভিত্তিক শ্রম সরবরাহকারী দেশ।
তিনি আরো বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ২ হাজার ওয়েবসাইটভিত্তিক উদ্যোক্তা এবং প্রায় ৫০ হাজার ফেসবুক নির্ভর উদ্যোক্তা রয়েছেন। করোনা মহামারীর এ সময়ে ই-কমার্স খাতে প্রায় এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। ডিজিটাল প্লাটফর্মে অনলাইনভিত্তিক ব্যবসার সুযোগ বেড়েছে। আগামী এক বছরে এ প্লাটফর্মে প্রায় পাঁচ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
গবেষণায় দেখা গেছে, ইন্টানেটের সহজলভ্য ব্যবহারের কারণে দেশে ডিজিটাল অর্থনীতির বিকাশ ঘটছে। গত এক বছরে ক্রিয়েটিভ ও মাল্টিমিডিয়া, সফটওয়ার ডেভেলপমেন্ট, ডাটা এন্টি এসব কাজে আগের চেয়ে দ্বিগুণ মানুষ নিযুক্ত হয়েছেন।
এই ডিজিটাল অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে পন্যের গুণগত মান নিশ্চিত হবার পাশাপাশি গ্রাহক ও বিক্রেতার মধ্যে স্বছতা নিশ্চিত হওয়া জরুরি। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এসব সেবাদান করার ক্ষেত্রে গড়ে ওঠেনি কোনো নীতিমালা।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক গবেষণা পরিচালক ড. এম আসাদুজ্জামান বলেন, দেশের তথ্যপ্রযুক্তির অবকাঠামো এখনো বেশ চ্যালেঞ্জিং। ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে কারা যেসব ডিজিটাল সেবা দেয়া হচ্ছে, সেটা কারা নিচ্ছেন তা জানা প্রয়োজন। সেবা যেন শুধু উচ্চবিত্ত ও উচ্চমধ্যবিত্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থাকে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এফইএস বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি ফেলিক্স কোলবিত্জ বলেন, এ ধরণের গবেষণা ও আলোচনায় প্রভাবশালী স্টেকহোল্ডারদের সম্পৃক্ত করতে হবে। তারা এ খাতগুলোর প্রসারের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরিতে সাহায্য করবে।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) সিনিয়র সহসভাপতি ফারহানা এ রহমান বলেন, দেশে প্রতিনিয়ত নতুন প্রযুক্তি আসলেও সেই অনুপাতে দক্ষ জনগোষ্ঠী তৈরী হচ্ছে না। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধাক্কায় জীবনে অনেক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতির বিকাশে শ্রমবাজার ধাক্কা খাচ্ছে। অনেকে বেকার হয়ে পড়ছে। কিন্তু একই সাথে নতুন বাজারও তৈরী হচ্ছে। তাই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুবিধাগুলো কাজে লাগাতে হলে মানবসম্পদের দক্ষতা বাড়ানো, আর্থিক সুবিধা প্রদান এবং অনলাইনভিত্তিক সেবাদানের নীতিমালা তৈরি করতে হবে।
ছবি ও তথ্যসূত্র – বণিকবার্তা