spot_imgspot_img

গুণগত মান বজায় রেখে রপ্তানি করতে

বাজার অবকাঠামো, সংরক্ষণ এবং পরিবহন সুবিধার মাধ্যমে ফুল বিপণন শক্তিশালী করার জন্যে ফুল সংরক্ষণাগার তৈরীর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ঢাকার গাবতলীতে এই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সংরক্ষণাগার তথা মার্কেট নির্মিত হবে। ফুলের গুণগত মান বজায় রেখে সংরক্ষণ এবং রপ্তানি বাজার ধরার লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পেয়েছে। নির্মাণ কাজ দেখভালের জন্য গণপূর্ত অধিদপ্তরকে (পিডব্লিইডি) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। 

তিনতলা বিশিষ্ট এই মার্কেট নির্মাণের জন্য মোট খরচ হবে ২৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এখানে অন্তত ৩৫০ জন পাইকারি ফুল ব্যবসায়ীকে জায়গা দেয়া সম্ভব হবে।  নয় মাসের মধ্যে মার্কেটটির নির্মাণ কাজ শেষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে পিডব্লিইডি।

 

মার্কেটটি নির্মাণ হলে রাজধানীর ফুল ব্যবসায়ীরা অবিক্রিত ফুল কোল্ড চেইন প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণের সুযোগ পাবেন। এতে করে ক্ষেত্রভেদে ২০-৩০ শতাংশ পর্যন্ত ফুলের পচন রোধ সম্ভব হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। তাতে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে গুণগত মানের ফুল সরবরাহের পাশপাশি ফুল রপ্তানির সুযোগও বাড়বে।

 

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এবং এই প্রকল্পের পরিচালক দেওয়ান আশরাফুল ইসলাম বলেন, “এখানে ফুল প্রক্রিয়াজাত ছাড়াও আমরা চেষ্টা করব ফ্রিজিং ভ্যান রাখার জন্য। যাতে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে ফুলের মান বজায় রেখে, দাগমুক্ত অবস্থায় সরবরাহ করা যায়। এছাড়া এই শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কক্ষ ফুলের মান ঠিক রাখতে সাহায্য করবে। তাতে দেশীয় বাজারের পাশাপাশি বিদেশের বাজারে আমাদের ফুলের কদর বাড়বে বলে আমার বিশ্বাস।”

 

অত্যাধুনিক এই মার্কেট নির্মাণ হলে শিক্ষিত তরুণ উদ্যোক্তাদের এই পেশায় কর্মসংস্থানের আগ্রহ বাড়বে বলে মনে করেন বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন মোঃ বাবর।

তিনি বলেন, “এখন খড়ের গাদার মতো ফুল সংরক্ষণ করা হয়। এই মার্কেট হলে সেই অবস্থার পরিবর্তন আসবে। পুরো প্রক্রিয়ায় কোল্ড চেইন নিয়ন্ত্রণ করার ফলে রপ্তানি বাজার ধরার সুযোগ তৈরি হবে। ২০১৪ সাল থেকে এজন্যে আমরা সরকারকে বললেও নানা কারণে এতোদিন কাজটি হয়নি। এবার আলোর মুখ দেখায় কোভিড পরবর্তী সময়ে ফুল ব্যবসায় আশার আলো দেখছে ব্যবসায়ীরা।”

তাছাড়া এই মার্কেট নির্মাণ হলে শাহবাগ ও শেরে বাংলা নগরের মতো জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ব্যবসায়ীদের  সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে। এতে করে এখানে বড় ধরনের বিনিয়োগ আসবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

বিষয়টি নিয়ে শেরে বাংলা নগর ফুল চাষী ও ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মোঃ খোরশেদ আলম বলেন, “করোনাকালে আমাদের ব্যবসা একেবারে পড়ে গেছে। সরকারের এই উদ্যোগ করোনা পরবর্তী সময়ে ফুল চাষীদের জন্য বড় ধরনের আশীর্বাদ। আমার ধারণা এই মার্কেট চালু হলে সারা দেশের অবহেলিত ফুল ব্যবসায়ীরা আজীবন লাভবান হবেন।”

 

এখানে উল্লেখ্য যে, রপ্তানি বাজারে প্রবেশের জন্যে ঈদুল ফিতরের আগে সৌদি আরবে এক লট ফুল পাঠানো হয়। তবে প্রক্রিয়াজাতকরণে সমস্যার কারণে সেখানের ফুল ব্যবসায়ীরা ফুল গ্রহণে আপত্তি জানান

এর আগে অস্ট্রেলিয়াতে ফুলের নমুনা পাঠানোর হয়। তবে ট্রায়াল লটে প্যাকেজিং সমস্যা ও প্রক্রিয়াজাতকরণ দুর্বলতার কারণে তা গ্রহণ করেনি সেখানকার কর্তৃপক্ষ। এ সরকারের এই উদ্যোগ রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণে ভূমিকা রাখবে বলে প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।

 

তথ্যসূত্র –  দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

 

Get in Touch

spot_imgspot_img

Related Articles

spot_img

Latest Posts