০জাহিদুল ইসলাম০
দুনিয়া ওলোটপালট করে দেওয়া অদৃশ্য করোনা ভাইরাস মানুষকে শুধু মেরেই ফেলছে না। অনেক কিছুকে মৃতপ্রায় করে রেখে যাচ্ছে। ঘটনা যাই হোক, বলি কিন্তু মানুষই। এটি কবে মানুষের ঘাড় থেকে নামবে বা তারপর কী হবে সেটা ভেবেও সেই মানুষই দিনরাত এক করছেন।
তো পৃথিবী জুড়ে করোনা পরবর্তী দ্বিতীয় আঘাত ধেয়ে আসা শুরু হয়েছে। সেটা হচ্ছে অর্থনৈতিক মন্দা। এই মন্দা ঠেকাতে পৃথিবীর সব দেশ নানাভাবে ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা প্যাকেজ ঘোষণা করছে। সেই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেছেন ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার আর্থিক প্রণোদনা প্যাকেজ। গত ৫ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে প্রেস কনফারেন্সের মাধ্যমে এই কর্মপরিকল্পনা ঘোষণা করেন।
আর এই ৭২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার প্যাকেজে রয়েছে ক্ষুদ্র এবং মাঝারি উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ প্যাকেজ, যার পরিমাণ ২০ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো সংশ্লিষ্ট ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল বাবদ ঋণ দেবে। আমি সকল উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীর এই প্যাকেজ ঘোষণাকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
এই ঋণে সুদের হার কত?
এ ঋণসুবিধার সুদের হার হবে ৯ শতাংশ। ঋণের ৪ শতাংশ সুদ ঋণ গ্রহীতা পরিশোধ করবে এবং বাকি ৫ শতাংশ সরকার ভর্তুকি হিসাবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে দেবে। অনেকে ভেবেছেন ৪ শতাংশ সুদে কোনো বেসরকারি ব্যংক লোন দেবে না। আসলে আপনি ৪ শতাংশ পরিশোধ করলেও ব্যাংক পাবে ৯ শতাংশ। আমি বিশ্বাস করি সরকারের এই সুবিধা বাস্তবায়ন হলে অনেক উদ্যোক্তা এই ক্রান্তিকালে আসার আলো দেখতে পাবেন।
উদ্যোক্তাদের প্রশ্ন, ব্যাংকের বিভিন্ন শর্তের মারপ্যাঁচে ঋণ পাওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু?
আপনাকে একটা প্রশ্ন করি: ব্যাংকের আয় কি? নিশ্চয়ই আপনি উত্তর দেবেন ব্যাংক মানুষকে ঋণ দেয়, তা থেকে যে সুদ পায় সেটাই তাদের আয়। যদি তাই হয় তবে তাদের কাজ ঋণ দেওয়া এবং সঙ্গে এটাও নিশ্চিত করা যিনি ঋণ নিচ্ছেন তিনি যেন সময় মত টাকাটা ফেরত দিতে পারেন। আপনার ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা, ট্রানজেকশন, ব্যবসার ধরণ এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে ব্যাংক ঋণের ফাইল গ্রহণ বা বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
ব্যাংকের যে কর্মী আপনাকে ঋণ দেবেন, তার ওপরেও দায়িত্ব থাকে এবং চাপ থাকে। তারও চাকরি হারানোর ভয় আছে, আছে জবাবদিহিতা। তাই সে আপনার নানা তথ্য মিলিয়ে দেখবে এটাই স্বাভাবিক। তবে আপনি যদি প্রমাণ করতে পারেন আপনার যে টাকার প্রয়োজন সেটা যুক্তি সঙ্গত এবং আপনি ঋণের কিস্তির টাকা নিয়মিত পরিশোধ করতে পারবেন। তবে ব্যাংক নিশ্চয়ই আপনাকে ঋণ দেবে। কারণ এটাই ব্যাংকের আয়ের মূল উৎস।
আপনি একজন ব্যবসায়ী, ধরুণ যার সঙ্গে কোনোদিন আপনার পরিচয় নেই তাকে প্রথম দিন বাকিতে পণ্য দিবেন? নিশ্চয়ই দেবেন না, তাহলে আপনার ব্যবসায়িক লেনদেন না দেখে ব্যাংক কিভাবে ঋণ দেবে এটাও আপনাকে ভেবে দেখতে হবে।
ন্যূনতম কী কী ডকুমেন্ট থাকতে হবে?
১। ট্রেড লাইসেন্স (আপনি ব্যবসা করছেন তার প্রমাণ হচ্ছে এই লাইসেন্স)
আপনার ব্যবসা যে এলাকায় অবস্থিত সেই এলাকার সিটি কর্পোরেশন অফিস বা পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে এই লাইসেন্স সংগ্রহ করতে হবে।
২। বিজনেস ব্যাংক অ্যাকাউন্ট (সঙ্গে নিয়মিত ট্রানজেকশন)
আমি সব সময় বলি একটা সোজা হিসাব, প্রতিমাসে আপনার যত টাকা ব্যাংকে জমা হলো সেটা হচ্ছে আপনার সেলস, যেটা উত্তোলন হয়েছে সেটা আপনার খরচ এবং যেটা স্থিতি রয়েছে সেটা আপনার মুনাফা।
৩। টিআইএন (TIN) সার্টিফিকেট (আপনি ব্যবসায়ী হলে অবশ্যই থাকতে হবে)
এটির প্রক্রিয়া অতি সহজ https://incometax.gov.bd/Registration/Index এই ওয়েবসাইট থেকে যে কেউ কয়েকটি ধাপ ফলো করে টিআইএন (TIN) সার্টিফিকেট নিতে পারেন, এটি সম্পূর্ণ ফ্রি।
এই ঋণ পাওয়ার জন্য যা যা করতে হবে সেটা নিয়ে হাজির হব পরের পর্বে।
জাহিদুল ইসলাম: উদ্যোক্তা, চুইঝাল
Thank you very much for share this kind of nice and informative post. I am looking for this kind of post. I am doing business last 3 years, i have a small business, some time i feel i need little support ( loan ) to grow up my business.
Thank you again