দেশের ফ্যাশন জগতে একটি আলোচিত এবং জনপ্রিয় নাম আজরা মাহমুদ। বাংলাদেশের জনপ্রিয় র্যাম্প মডেল ও কোরিওগ্রাফার তিনি। এর বাইরে একজন সফল উপস্থাপিকা হিসেবেও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে । দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন দেশের গ্ল্যামার জগতে। ফ্যাশন শো-এ নতুনত্ব বা ভিন্নধারার ভিত্তি গড়ে তোলার পেছনে যে কয়জন মানুষের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখ করার মতো তাদের মধ্যে অন্যতম আজরা মাহমুদ।
ছোটবেলায় সময় পেলেই ফ্যাশন বিষয়ক চ্যানেল দেখার সময়ই মডেল হবার ইচ্ছাটা জন্ম নেয়। ২০০১ সালে ’এভেলুশন’ নামে একটি মডেলিং এজেন্সি থেকে তিন মাসের প্রশিক্ষণ নেন। পাশাপাশি বাসার আয়নার সামনে প্রতিদিন নিয়মিত মডেলিং চর্চা করতেন। পরবর্তীতে ২০০১ সালের অক্টোবরে প্রথম শোতে মডেল হিসেবে অংশ নিয়ে র্যাম্প মডেল হিসেবে যাত্রা শরু করেন।
২০০২ সালে ইউ গট দ্য লুক প্রতিযোগিতায় বেস্ট লুক অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তি সামনের দিকে এগিয়ে চলতে সাহস যুগিয়েছে। ২০০৪ সাল আজরা মাহমুদের ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। কারন ২০০৪ সালে ইউ গট দ্য লুক প্রতিযোগিতায় প্রথমবারের মতো কেরিওগ্রাফির মাধ্যমে কোরিওগ্রাফার হিসেবে যাত্রা শুরু, একই বছর সানসিল্ক অষ্পরা অনুষ্ঠান উপস্থাপনার মাধ্যমে উপস্থাপনার যাত্রা এবং জনপ্রিয় মেগাসিরিয়াল ডলস হাউসে অভিনয়।
আরও পড়ুন লুনা শামসুদ্দোহা নারী উদ্যোক্তা সম্মাননা পেল ক্রিয়েটিভ সফট টেকনোলজি
আজ এই সময়ে এসে দেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে আজরা মাহমুদ নিজেই একটি ব্র্যান্ড, নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান। নতুন কাজ করতে আসা যেকোনো ছেলে-মেয়ের কাছে তিনি আইডল।
ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রি অনেক ডেভেলপ করেছে, কাজের নানা ক্ষেত্র বেড়েছে তাই মানসম্মত মডেলের এখন খুবই দরকার। এই চিন্তা থেকে শুরু করেন আজরা মাহমুদ অ্যান্ড গ্রুমিং স্টুডিও। বর্তমানে এই প্রতিষ্ঠানের নাম আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্প। ফ্যাশন ইন্ড্রাস্টিতে সফলতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে তার প্রতিষ্ঠান।
‘আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্প’কে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়েই প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছেন তিনি । তার এই ক্যাম্প থেকে ইন্টারন্যাশনাল লেভেলে কাজ করার লাইসেন্সও যোগাড় করেছেন তিনি। ‘ফেস অব বাংলাদেশ’ এবং ‘মিস্টার এন্ড মিস সেলেব্রিটি বাংলাদেশ’ নামক দুটি আয়োজনে প্রতিবছর আজরা মাহমুদ তার প্রতিষ্ঠান থেকে বের হওয়া মিনিমাম চারজন ছেলে মেয়েকে দেশের বাইরে পাঠানোর ব্যবস্থাও করছেন যাতে ইন্টারন্যাশনাল লেভেলে কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারে এবং সেই অভিজ্ঞতার আলোকে দেশের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রিতে গুরুত্বপূর্ণ এবং নতুন ধারাতে ভূমিকা রাখতে পারে। ‘আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্প’ থেকে পারসোনালিটি ডেভেলপমেন্ট এবং উপস্থাপনা সহ বেশকিছু কোর্স শীঘ্রই শুরু করবেন।
করোনার সময় একটি ভার্চুয়াল ফটোশ্যুটের আয়োজন করেছিলেন, ক্যানভাসের সাথে মিলে তার তত্ত্বাবধানে এই শ্যুটে ঘরে বসেই অংশ নিয়েছেন দেশের নামকরা জনপ্রিয় মডেল, কোরিওগ্রাফার, ফটোগ্রাফাররা।
আরও পড়ুন ‘উদ্যোক্তা সম্মাননা ২০২২’ পেলেন ১৯ তরুণ উদ্যোক্তা
সত্যিকারের প্রশিক্ষণ, গ্রুমিং এবং সঠিক দিকনির্দেশনা পেলে আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মেও ভালো কাজের সাক্ষর রাখতে পারবে বলেই আশা করেন আজরা। দুচোখে অনেক স্বপ্ন নিয়ে নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে এই সময়ে এসে আমাদের ফ্যাশন ইন্ডাস্ট্রির অন্যতম স্তম্ভ আজরা মাহমুদ। স্বপ্ন পূরনের লক্ষ্য কাজের প্রতি ভালোবাসা, কঠোর পরিশ্রম, মেধা এবং দক্ষতার মাধ্যমে এই ইন্ডাস্ট্রিতে নিজেকে সফলতার সর্বোচ্চ শিখরে নিয়ে যাওয়া আজরার নতুন দিনের নতুন স্বপ্ন পূরণ হোক – সেই প্রত্যাশা রইলো।
২০২২ সালের নুরুল কাদের সম্মাননা পেলেন আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্পের উদ্যোক্তা আজরা মাহমুদ ।